আমাদের সম্পর্কে
“জন কক্ষ পরিষদ বাংলাদেশ” কী?
“জন কক্ষ পরিষদ বাংলাদেশ” একটি অরাজনৈতিক, সর্বজনীন, সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী গবেষণামূলক ও জনমতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপরিচালনায় পরামর্শদানকারী একটি প্রস্তাবিত রাষ্ট্রীয় প্ল্যাটফর্ম। এই পরিষদ তিন মাস পর পর একত্রিত হয়ে, রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে—সরকারি প্রতিষ্ঠান, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ বিভিন্ন সংস্থার কাজের অগ্রগতি, ব্যর্থতা এবং বাধাসমূহ মূল্যায়ন করে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণে রাষ্ট্রকে পরামর্শ প্রদান করবে।
আমাদের কেন প্রয়োজন?
পাঁচ বছর পরপর একটি ভোট দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ তাদের দায় শেষ করে ফেলে—এই ধারণা আজকালকার গণতন্ত্রে আর কাজ করে না। আমরা চাই এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা, যেখানে প্রতিনিয়ত, প্রতিসপ্তাহে, প্রতিমাসে, জনগণের অভিমত, অভিজ্ঞতা ও দাবির প্রতিফলন থাকবে।
আমরা দেখেছি বিগত পাঁচ দশকে জনগণের প্রতিনিধি বলে যারা শাসন করেছেন, তাদের অনেকেই জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে বিস্মৃত হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ ও দলীয় শক্তির প্রসারে নিয়োজিত ছিলেন। সেই শোষণমুখী ব্যবস্থা থেকে উত্তরণে, জনগণের কণ্ঠস্বরকে রাষ্ট্রযন্ত্রের কেন্দ্রে নিয়ে আসাই “জন কক্ষ পরিষদ বাংলাদেশ”-এর মূল উদ্দেশ্য।
এই পরিষদের কাঠামো কেমন?
আমরা প্রত্যেক পেশাজীবী, প্রত্যেক ধর্ম, প্রত্যেক অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চাই।
• প্রতি তিন মাস অন্তর একটি সভা হবে যেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি মূল্যায়িত হবে।
• জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে থাকবে গণশুনানির ব্যবস্থা।
• উচ্চকক্ষের মতোই সংসদীয় কাজের জটিলতার নিরসনে পরামর্শ দেবে এই পরিষদ।
• তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি “ন্যায়পাল কমিটি” থাকবে যারা স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে।
• রাজনীতির বাইরে থেকে আসা এই পরিষদ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে থাকবে এবং কোনো সদস্যের মধ্যে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ থাকলে তাকে অপসারণের বিধান থাকবে।
এই উদ্যোগের রাষ্ট্রীয় গুরুত্ব কী?
বাংলাদেশের ৫৩ বছরের অভিজ্ঞতায় প্রমাণিত হয়েছে, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ, দালালচক্র ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মাধ্যমে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে জনগণের কল্যাণের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের সর্বোচ্চ মেধাবীরা অবহেলিত হয়েছেন, অপমানিত হয়েছেন, কেউ কেউ জীবন দিয়েছেন। আর সেই অবিচারের মূলে ছিল এককেন্দ্রিক, একতরফা রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার। আমরা চাই একটি ভবিষ্যৎ, যেখানে জনগণের অভিজ্ঞতা, চাহিদা, অভিপ্রায় ও প্রজ্ঞা রাষ্ট্রপরিচালনায় প্রতিফলিত হবে।
আমরা চাই, “জন কক্ষ পরিষদ বাংলাদেশ” সংবিধানে স্বীকৃত একটি গণতান্ত্রিক, জনমুখী পরামর্শক এবং নজরদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাক।
এই পরিষদের মাধ্যমে:
• জনগণের শক্তি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে।
• রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের চাহিদা উপেক্ষা করতে পারবে না।
• প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণে জনগণের প্রত্যক্ষ মতামত প্রতিফলিত হবে।
• জনচাহিদার ভিত্তিতে প্রয়োজনে উপজেলা, জেলা প্রশাসন পর্যন্ত দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত হবে।
একটি আশা, একটি বিশ্বাস
আমরা বিশ্বাস করি, বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর টিম, দেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন অনুধাবন করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নতুন গণতান্ত্রিক মডেল তৈরি করা সম্ভব।
সকল পেশাজীবী, পল্লীর কৃষক থেকে শুরু করে শহরের প্রযুক্তিবিদ, প্রবাসী ভাই থেকে শুরু করে শিক্ষক, ছাত্র, শ্রমিক, নারী, প্রতিবন্ধী, সকলেই—আজ এই বাংলাদেশে নতুন এক সূর্যোদয়ের প্রত্যাশা করছেন। সেই আলোতে আমরা এগিয়ে যেতে চাই, “জন কক্ষ পরিষদ বাংলাদেশ”-এর নেতৃত্বে—নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা, বিচার, ও জনমতের ভিত্তিতে একটি নিরাপদ ও সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে